গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় ভাষাশহীদদের স্মরণ করছে যশোরবাসী। শহীদদের আত্মত্যাগকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করতে শুক্রবার একুশের প্রথম প্রহরে এমএম কলেজ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুলেল শ্রদ্ধার মাধ্যমে দিবসের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এবার গরীবশাহ রোডের শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানো হয়নি। ছয় বছর পর এমএম কলেজের সেই আগের শহীদ মিনারে স্বতঃস্ফূর্তভাবে মানুষ শহীদদের স্মরণ করে।
ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে ফুল হাতে স্মৃতির মিনারে জড়ো হন আপামর জনতা। প্রথম প্রহরেই হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। রাত ১২টা ১ মিনিটে জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম ফুলেল শ্রদ্ধা জানান। পরে ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার নূর-ই-আলম সিদ্দিকীর নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনীর পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
শ্রদ্ধা জানায় জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ দলটির নেতৃবৃন্দ এবং আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগমের নেতৃত্বে জেলা বিএনপির নেতারা।
হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে প্রাণ ফিরে পায় শহীদ মিনার চত্বর। শ্রদ্ধা জানান প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুনের নেতৃত্বে নেতৃবৃন্দ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের সমন্বয়ক রাশেদ খানের নেতৃত্বেও শ্রদ্ধা জানানো হয়।
এছাড়া জেলা পরিষদ, যশোর পৌরসভা, সিআইডি, আনসার ভিডিপি, যশোর শিক্ষাবোর্ড, সিভিল সার্জন, ফায়ার সার্ভিস, যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার, এলজিইডি, আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, যশোর জেলা স্কুলসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
শ্রদ্ধা জানায় যশোর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, জেলা আইনজীবী সমিতি, সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোর, লোকসমাজ, স্পন্দন, বাংলাদেশ স্কাউট যশোর জেলা, প্রাচ্য সংঘ, ওজোপাডিকো, জাকের পার্টি, ব্যঞ্জন
থিয়েটারসহ নানা সংগঠন। এছাড়া নগর বিএনপি, সেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিক দল, মহিলা দল, মৎস্যজীবী দল, যুবদল, ছাত্রদল, জেলা কৃষক দল, নগর যুবদল, সদর উপজেলা যুবদল, নগর ছাত্রদল, এমএম কলেজ ছাত্রদলসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের শ্রদ্ধার ফুলে ভরে ওঠে এমএম কলেজের শহীদ মিনার।
উল্লেখ্য, ১৯৫৪ সালে যশোর মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজের পুরাতন ক্যাম্পাসে এবং ১৯৬২ সালে একই কলেজের নতুন ভবনের সামনে স্থায়ীভাবে শহীদ মিনার স্থাপিত হয়। এরমাঝে ২০১৮ সালে যশোর পৌরসভার তৎকালীন মেয়র ও জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম চাকলাদার মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পুরাতন ভবনের পাশে পৌরসভার অর্থায়নে নির্মাণ করেন আরেকটি শহীদ মিনার, যা বিভক্তির সূচনা করে। আওয়ামী লীগ নেতারা ওই শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেও বিএনপিসহ অনেকেই এমএম কলেজের শহীদ মিনারেই ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে আসছিলেন। তবে এ বছর সেই বিভক্তির অবসান ঘটেছে। একুশের প্রথম প্রহর থেকেই যশোরবাসী একত্রে এমএম কলেজের শহীদ মিনারে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
Leave a Reply