মাগুরায় ধর্ষণের শিকার আট বছরের শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থানান্তর করা হয়েছে। আজ বুধবার বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক আশরাফুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আশরাফুল আলম জানান, সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমিন মুর্শিদ আজ দুপুরে শিশুটিকে দেখতে যান এবং চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী তাকে সিএমএইচে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিকেল ৫টার পর শিশুটিকে কার্ডিয়াক অ্যাম্বুলেন্সে সিএমএইচে নেওয়া হয়, সঙ্গে ছিলেন একদল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
শিশুটির অবস্থা এখনো সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেলের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। তিনি জানান, শিশুটি ভেন্টিলেটরের মাধ্যমে শ্বাস নিচ্ছে এবং তার শরীরে পাশবিক নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে। যৌনাঙ্গে গুরুতর ক্ষতসহ গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
শিশুটির পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার বাসিন্দা। কয়েক দিন আগে সে তার বড় বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাকে অচেতন অবস্থায় মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
মাগুরা সদর থানার ওসি আইয়ুব আলী জানিয়েছেন, শিশুটির ধর্ষণের বিষয়ে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তদন্তের স্বার্থে তার দুলাভাই ও দুলাভাইয়ের বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে, এই ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে মাগুরায় বিক্ষোভ হয়। স্থানীয় ছাত্র-জনতা মহাসড়ক অবরোধ ও থানা ঘেরাও করেন। পরে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আজ শনিবার শিশুটির মা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন। মামলায় শিশুটির বোনের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে আসামি করা হয়েছে। তাঁরা আগেই পুলিশের হেফাজতে ছিলেন এবং মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মিরাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, শিশুটি বর্তমানে ঢাকায় চিকিৎসাধীন এবং তার মা সেখানে রয়েছেন। মামলার তদন্ত চলছে এবং যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply