1. akrajon11@gmail.com : rajon :
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম
যশোরে বর্ণাঢ্য আয়োজনে দৈনিক লোকসমাজ এর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন লাইনচ্যুত বগি অপসারণ,১০ ঘণ্টা পর খুলনার সাথে সারাদেশের রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’ যশোরে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ শানে রেসালত সম্মেল অনুষ্ঠিত যশোরের গদখালী যাত্রীবাহী বাস ও গরু ভর্তি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ : আহত ২৫ যশোরে যৌথসভায় দলের নির্দেশনা অমান্য করলে কঠোর ব্যবস্থা: যুবদল সভাপতি যশোরে বোর্ডে শীর্ষস্থানে যশোর, তলানিতে মেহেরপুর মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় জমি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে বড় বোন ও ভাইয়ের বউকে কুপিয়ে হত্যা  যশোরের চাঁচড়া ইউনিয়নের গোয়ালদাহ গ্রামে তালাক প্রাপ্ত স্ত্রীকে খুন করার পর রাতে ঘাতক স্বামীর আত্মহত্যা বৌ-ভাতের অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা

কক্সবাজারে ভারী বর্ষণে পাহাড় ধস, ৬ জনের মৃত্যু, শহরের ৯০ শতাংশ এলেকা প্লাবিত

  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

টানা ভারী বর্ষণে কক্সবাজারে পাহাড়ধসে ৬ জন নিহত হয়েছেন। বৃষ্টিতে কক্সবাজার শহরে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা। সড়ক-উপসড়কে পানি উঠে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।

শহরের হাজারও বসতবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে নষ্ট হয়ে গেছে লাখ লাখ টাকার মালামাল। এছাড়া কক্সবাজার সদরসহ  ৮টি উপজেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে প্লাবিত হয়েছে শতাধিক গ্রাম। এসব এলাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন লাখো মানুষ।

গত কয়েকদিন ধরে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত আছে কক্সবাজারে। গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে শুক্রবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত কক্সবাজার জেলায় মোট ৪৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত।

অতিবৃষ্টিতে জেলা শহরের প্রায় ৮৫ শতাংশ এলাকা পানিতে নিমজ্জিত হয়ে গেছে। শহরের প্রধান সড়ক, সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন সড়কসহ অন্তত ৪০টি উপসড়ক বৃষ্টির পানিতে ডুবে যায়৷ সেইসঙ্গে শহরের শতাধিক দোকানপাটের মালামাল নষ্ট হয়েছে। হাজারও ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হওয়ায় মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। জলাবদ্ধতার কারণে সৈকতে হোটেল মোটেল জোনের সকল সড়ক ডুবে গেছে। কলাতলীতে অবস্থিত পাঁচ শতাধিক হোটেল মোটেলে অবস্থান নেওয়া অন্তত ২০ হাজার পর্যটক আটকা পড়েছেন।

এছাড়া উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড়ি ঢলের পানিতে বেশ কয়েকটি বসতি ডুবে যায়। জেলার চকরিয়া, পেকুয়া, কুতুবদিয়া, রামু,  উখিয়া, টেকনাফ, ঈদগাও এবং কক্সবাজার সদরের নিম্নাঞ্চলে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। সৃষ্ট বন্যায় ক্ষতির মুখে পড়েছে বীজতলা, পানের বরজ এবং সবজি ক্ষেত। ইতোমধ্যে ৮ উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বাঁকখালি এবং মাতামুহরী নদীর পানি বিপদ সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে নতুন করে শতশত এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসী জানান, গত (১২ সেপ্টেম্বর) বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে বৃষ্টিপাত শুরু হলেও ভারী বর্ষণ শুরু হয় দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে। এরপর রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত টানা ১২ ঘণ্টার ভারী বর্ষণ মানুষের কর্মজীবন অনেকটাই থামিয়ে দেয়।

কক্সবাজার এমন জলাবদ্ধতা গত ৩০ বছরেও শহর বাসি দেখেনি। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পৌরসভার মেয়রসহ অধিকাংশ কাউন্সিলর  আত্মগোপনে চলে যান। শহরের ময়লা-আবর্জনায় নালা-নর্দমা ভরে আছে। ভারী বর্ষণ ও পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলের পানি নালা দিয়ে নেমে যেতে পারছে না বলেই শহরজুড়ে এমন জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। সড়কের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

এদিকে, ভারী বর্ষণের কারণে জেলার অধিকাংশ পাহাড়ে ফাটল দেখা দিয়েছে। বেশ কিছু এলাকায় ভূমি ধসের ঘটনাও ঘটছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে সদরের ঝিলংজা দক্ষিণ ডিককুল এলাকায় পাহাড়ধসে স্থানীয় বাসিন্দা মিজানুর রহমানের পরিবারের তিন সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। নিহত ব্যক্তিরা হলেন- মিজানের স্ত্রী আঁখি মণি (২৮), মেয়ে মিহা জান্নাত (১২) ও লতিফা ইসলাম (৯)। পাহাড়ের পাদদেশে মিজানের বাড়ি অবস্থিত হওয়ায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।

অন্যদিকে, উখিয়া ১৪ নম্বর হাকিম পাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড়ধসে তিনটি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে একই পরিবারের তিনজন নিহত হয়েছেন।

তারা হলেন- ১৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ই-২ ব্লকের কবির আহমেদের ছেলে আব্দুর রহিম, আব্দুল হাফেজ এবং আব্দুল ওয়াহেদ।

কক্সবাজার ত্রাণ ও প্রত্যাবাশন কমিশন কার্যালয়ের অতিরিক্ত কমিশনার শামসুদ দৌজা নয়ন জানিয়েছেন, ভারী বর্ষণে উখিয়া ১৪ নম্বর হাকিম পাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধসে তিনটি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবকেরা বিধ্বস্ত ঘর বাড়িতে উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।

কক্সবাজার আবহাওয়া কার্যালয়ের সহকারী আবহাওয়াবিদ আব্দুল হান্নান বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টা থেকে শুক্রবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত কক্সবাজারে ৪৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। চলমান মৌসুমে এটি এক দিনে সর্বোচ্চ বৃষ্টির রেকর্ড। আরও কয়েকদিন ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানান তিনি।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বিভীষণ কান্তি দাশ  বলেন, শুক্রবার সকালে ঝিলংজায় ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত তিন জনের পরিবারকে ৭৫ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দিয়েছে জেলা প্রশাসন। পাহাড়ের ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থান থেকে লোকজনকে সরিয়ে আনা হচ্ছে। ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে চারটি পৃথক টিম মাঠে নেমেছে৷

নিউজটি শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..